গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনই ছাত্রলীগে নিয়ম! সাইফ মাহমুদ রিয়াদ।

২০১৫ সালের ২৫-২৬ জুলাই সম্মেলনে বর্তমান কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় সোহাগ-জাকির প্যানেল নির্বাচিত হয়। এর সাত মাস পর ২০১৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ২৪ জুলাই এ কমিটির মেয়াদ শেষ হবে। কমিটি পূর্ণাঙ্গের সময় অভিযোগ ওঠে বহিষ্কৃত, হত্যা মামলার আসামি, ইয়াবা কারবারি ও অপহরণকারীদের পদ দেওয়ার। অথচ অনেকেই সক্রিয় থাকার পরও পদ পাননি।
সূত্র জানায়, নব্বইয়ের দশকের আগে ছাত্রলীগের কমিটি নিয়মের মধ্যেই হয়েছে; যদিও কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিল। সর্বশেষ ১৯৯২-১৯৯৪ সালে মাঈনদ্দিন হাসান চৌধুরী ও ইকবালুর রহমান কমিটি দুই বছরের মধ্যেই নতুন কমিটি গঠন করে। এরপর পাঁচটি কমিটি চার বছর করে দায়িত্ব পালন করেছে। সর্বশেষ বদিউজ্জামান সোহাগ-সিদ্দিকী নাজমুল আলম কমিটি ২০১১-২০১৫, মাহমুদ হাসান রিপন-মাহফুজুল হায়দার রোটন কমিটি ২০০৬-২০১১, লিয়াকত সিকদার ও নজরুল ইসলাম বাবু কমিটি ২০০২-২০০৬, বাহাদুর বেপারী ও অজয় কর খোকন কমিটি ১৯৯৮-২০০২, এ কে এম এনামুল হক শামীম ও ইসহাক আলী খাঁ পান্না কমিটি ১৯৯৪-১৯৯৮ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে ছিল।
ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে বলা হয়েছে, প্রতি দুই মাসে অন্তত একবার কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাধারণ সভা হবে। এর বাইরেও প্রতি মাসে কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সভা, বিষয়সূচি নির্ধারণ ও আলোচনা এবং দুই মাস পর পর সম্পাদকমণ্ডলী নিজ নিজ কাজের ফিরিস্তি নির্বাহী সংসদের কাছে লিখিতভাবে জানাবেন ও পরবর্তী কর্মসূচি বা কার্যক্রম বিষয়ে পরিকল্পনা করবেন। বর্তমান পূর্ণাঙ্গ কমিটির দুই বছর পূর্ণ হতে চললেও নির্বাহী সংসদের সম্পাদকরা এখনো দায়িত্ব বুঝে পাননি। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছের বিবেচিত ব্যক্তিদের দিয়ে সংগঠনের কাজ চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দপ্তর, প্রচার, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক কেবল দায়িত্ব পালন করছেন।
ছাত্রলীগের দপ্তর সূত্রে জানা যায়, সব জেলা ইউনিট নিয়ে বর্ধিত সভা হয়েছে একটি। এর বাইরে দেশব্যাপী জঙ্গিবাদের উত্থান নিয়ে একটি আর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিষয়ে দুটি প্রস্তুতি সভা হয়েছে। সর্বশেষ সিলেটে জঙ্গি আস্তানা পাওয়ার পর সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জঙ্গিবাদবিরোধী মানববন্ধন করেছে সংগঠনটি। প্রতি দুই মাসে একটি সভা হওয়ার নিয়ম থাকলেও তা করতে পারেনি সংগঠনটি।ছাত্র অধিকার : ছাত্রসংগঠন হলেও ছাত্র-ছাত্রীদের কোনো অধিকার নিয়ে রাজপথে আসেনি ছাত্রলীগ। যদিও সম্প্রতি নানা ইস্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশব্যাপী আন্দোলন হলেও রাজপথে আসেনি সংগঠনটি। মেট্রো রেল, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যায় সারা দেশে প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনের মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় উঠলেও কোনো কর্মসূচিতে ছিল না ছাত্রলীগ। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্যাট আরোপের সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও মাঠে নামেনি সংগঠনটি। সরকারি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের কয়েক ঘণ্টা আগে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছিল সংগঠনটি।

Comments

Popular posts from this blog

অভিজ্ঞতাবাদ

সমাজতান্ত্রিক ও পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য